তারল্য সঙ্কটের কারনে বেসরকারি ব্যাংকে যাচ্ছে সরকারি আমানত

প্রচ্ছদ » Uncategorized » তারল্য সঙ্কটের কারনে বেসরকারি ব্যাংকে যাচ্ছে সরকারি আমানত

ramitance_bbপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক: সরকারি আমানতের ৪০ শতাংশ যাচ্ছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে। তারল্য সঙ্কটের কারণে ব্যাংকগুলোর দাবি প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সরকারি আমানতের মাত্র ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখার বিধান রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সঙ্কট এখন চরমে। এর প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে, ব্যক্তি খাতের ঋণ প্রবাহে পড়েছে ভাটা। এ অবস্থায় আমানত সংগ্রহে হন্য হয়ে বেড়াচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। আমানতের সুদের হার বাড়িয়েও কাজ হচ্ছে না। উপায়ান্তু না পেয়ে সরকারি আমানত চায় বেসরকারি ব্যাংকগুলো। যা বর্তমানে ২৫ শতাংশের বেশি রাখার নিয়ম নেই।

এ প্রেক্ষাপটে রাজধানীর গুলশানে ব্যাংকের শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর অফিসে এক বৈঠকে বসেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশের সব ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত রয়েছেন।

ঋণ বিতরণের মতো পর্যাপ্ত আমানত না পেয়ে অনেক ব্যাংকেরই বিনিয়োগ ঝুলে গেছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে। নগদ তারল্যের সঙ্কট কাটাতে সরকারি আমানতের জোগান বাড়াতে চায় বেসরকারি ব্যাংকগুলো। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখার বিধান থাকলেও তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব করছে তারা। তবে শেষ পর্যন্ত তা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। ব্যাংকে তারল্য কম থাকায় আমানতের সুদ হার বেড়েছে। ফলে ঋণের সুদের হারও বেড়েছে। এ অবস্থায় সরকারি আমানতের ৪০ ভাগ বেসরকারি ও ৬০ ভাগ সরকারি ব্যাংকে রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই সার্কুলার জারি করা হবে। এতে ঋণ হার বৃদ্ধিসহ চাঙা হবে শেয়ারবাজার।

এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এ ব্যাপারে মৌখিক দাবি জানিয়েছিল বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। বিষয়টি নিয়ে গভর্নরসহ সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে আলোচনাও হয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে ব্যাংকারদের সঙ্গে বসলেন অর্থমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকের (বিএবি) সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার জানান, বৈঠকে ব্যাংক খাতের এ সঙ্কটকালীন মুহূর্ত কীভাবে দূর করা যায় সেই ব্যাপারে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ কোটি টাকা সরকারি আমানত। বাকি ৮ লাখ কোটি টাকাই বেসরকারি আমানত।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি আমানতের ৭৫ শতাংশ তথা দেড় লাখ কোটি টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় জমা থাকার কথা। বাকি ৫০ হাজার কোটি টাকা জমা থাকার কথা দেশের ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকে। তবে ঠিক কী পরিমাণ সরকারি আমানত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় জমা আছে, সে সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান নেই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে।

সূত্র: জাগো নিউজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *