নেপাল ট্রাজেডিঃ শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেলো না শাহীন ব্যাপারীকে

প্রচ্ছদ » Uncategorized » নেপাল ট্রাজেডিঃ শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেলো না শাহীন ব্যাপারীকে

sahin (1)নিজস্ব প্রতিবেদক: নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের সারি আরেকটু দীর্ঘ হলো। শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেলো না বিমান দুর্ঘটনায় আহত শাহীন ব্যাপারীকে। নেপাল থেকে দেশে ফিরে দুই দফা অস্ত্রোপচারের পরও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

আজ সোমবার সকালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার পর বিকালে শাহীন ব্যাপারীর মৃত্যু ঘোষণা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা।

আহত অবস্থায় নেপাল থেকে দেশে আনার পর শাহীন ব্যাপারী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ভাবি নাই বাঁচব”। কিন্তু ডাক্তারদের সব চেষ্টা বৃথা করে তিনি চলে গেলেন। ৪৩ বছর বয়সী শাহীনের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে। তিনি ঢাকার সদরঘাটে করিম এন্ড সন্স নামে একটি কাপড়ের দোকানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। স্ত্রী রিমা ও আট বছরের মেয়ে সূচনাকে নিয়ে থাকতেন নারায়ণগঞ্জের আদমজীতে একটি বাসায়।

শাহীন সহ গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭। আহতের সংখ্যা ৯, যাদের প্রায় সবাই অগ্নিদগ্ধ। ওই দুর্ঘটনায় মারা যায় মোট ৪৯ জন।

বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর আগুন ধরে যাওয়ায় হাতহত যাত্রীদের অধিকাংশই পুড়ে গিয়েছিলেন। শাহীনের শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়েছিল এবং তা ‘ডিপ বার্ন’ ছিল বলে তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন চিকিৎসকরা।

নেপালের চিকিৎসকরা শাহীনের দেহে আগুনের ক্ষতের পরিমাণ ১৮ শতাংশের মতো জানিয়েছিলেন। কিন্তু গত ১৮ মার্চ ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তির পর তা ৩২ শতাংশের বেশি দেখা যায়।

গত বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শাহীনের প্রথম দফার অস্ত্রোপচার হয়। রোববার দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচারে তার ক্ষতের ৮০ শতাংশের চিকিৎসা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা তার অবস্থা ভালোই বলেছিলেন। কিন্তু আজ সোমবার সকাল থেকে অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. হোসাইন ইমাম দুপুরে বলেছিলেন, ইনফেকশনের কারণে’ সকাল থেকে শাহীনের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। তার প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই ধরনের বার্নে ইনফেকশন দ্রুত ছড়িয়ে সারা শরীরে চলে যায়। ফুসফুস, হার্ট সবখানে। তার কার্ডিয়াক সমস্যাও হয়েছে বলে ধারণা করছি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শাহীন ব্যাপারী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ডা. ইমাম বলেন, বিকেল ৫টার দিকে আমরা ডেথ ডিক্লেয়ার করেছি। তার পোস্ট মর্টেমের প্রক্রিয়া চলছে। সন্ধ্যার মধ্যে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।

নেপাল থেকে আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে শাহীনসহ সাতজনকে দেশে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বাকি পাঁচজনের অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আহত তিন বাংলাদেশিকে নেপাল থেকেই বিদেশ পাঠানো হয়েছিল। তাদের দুজন সিঙ্গাপুর এবং একজন ভারতে রয়েছেন। তাদের অবস্থাও স্থিতিশীল বলে খবর পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *