khairulপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক: কোম্পানির দেওয়া কাগজপত্রে ত্রুটি না থাকলে ৯০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) আয়োজিত তিন দিনের ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফেয়ারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদারের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাইম ফিন্যান্স অ্যান্ড ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন। আলোচনায় অংশ নেন সিএসইর পরিচালক মো ছায়েদুর রহমান ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম রুবেল। অনুষ্ঠানে ২০১৬ সালের সেরা রিপোর্টারদের হাতে পুরস্কার তুলেদেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

বিএসইসির চেয়ারম্যান ড.এম খায়রুল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য সময় জ্ঞান অনেক বেশি জরুরি। সময় জ্ঞান নিয়ে জেনে বুঝে বিনিয়োগ করতে পারলে পুঁজিবাজার থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব। আর এটি করতে না পারলে এখান থেকে মুনাফা লাভ করা অসম্ভব।

উদ্যোক্তাদের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে আসলে আপনাদের কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়বে। আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করলে সুদ দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা থাকে, পুঁজিবাজারে সেটি থাকে না। পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া টাকার জন্য বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিলেই হবে। কাগজপত্রে কোনো ধরণের ত্রুটি না থাকলে ৯০ দিনের মধ্যে আইপিও অনুমোদন দেওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসনে বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাগুলো হলো অর্থনীতি যত বড়, পুঁজিবাজার তত বড় নয়। ফলে এর আকার বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের ব্যাপক সংস্কার হয়েছে, ফলে উদ্যক্তারা চাইলে আইন মেনে সহজে তালিকাভুক্ত হতে পারে।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে রিটার্নের হার অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের মনে করে শ্রমে ঘামে তৈরি একটি কোম্পানি কেন সবার কাছে দিয়ে দিব। এটি তাদের ভুল ধারণা। এই ধারণা থেকে বের হতে হবে। পুঁজিবাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, তবে আমাদের বাজারের সমস্যাগুলো হলো এখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নির্ভর, আকার ছোট, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের তেমন কোনো ভূমিকা নেই, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। ফলে পুঁজিবাজারের স্বার্থের কথা ভেবে বিএসইসি একটি সিদ্ধান্ত নিলে অন্যরা আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বাধা তৈরি করে। এতে করে পুঁজিবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসতে ভয় পায়।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বড় বড় কলকারখানা হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই কলকারখানা করা সম্ভব নয়। তাহলে কোথায় টাকা পাবে উদ্যোক্তারা। এর জন্য ভালো জায়গা হলো পুঁজিবাজার। তবে এর জন্য পুঁজিবাজারকে প্রস্তুত করতে হবে। একই সঙ্গে বহুজাতীক কোম্পানি বাজারে আনার উপর জোর দেন তিনি।

ছায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের রেগুলেটরদের মধ্যে সমন্বয় নেই। পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে নেওয়ার আগে বিএসইর সঙ্গে আলপা করার উপর জোর দেন তিনি।

সেরা রিপোর্টারদের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন

সমাপনী অনুষ্ঠানে সেরা রিপোর্টারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় টেলিভিশনে পুরস্কার পেয়েছেন বাংলা ভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার জিয়াউল হক সবুজ, প্রিন্ট ক্যাটাগড়িতে শেয়ার বিজের স্ট্যাপ রিপোর্টার নিয়াজ মাহমুদ সোহেল এবং অনলাইন ক্যাটাগরিতে বাংলা নিউজ ২৪ ডট কমের সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *