আগামী বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে করোনাসহ ৯টি বিষয়

প্রচ্ছদ » Breaking News || Slider || আজকের সংবাদ » আগামী বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে করোনাসহ ৯টি বিষয়

পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক :চলমান করোনাভাইরাসের প্রভাবে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিও প্রচণ্ডভাবে ধাক্কা খেয়েছে। এরই মধ্যে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ (দ্বিতীয় ঢেউ) নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে। করোনার সব প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি কতটা শক্তভাবে দাঁড়াতে পারবে তা নিয়ে চলছে ব্যাপক বিশ্লেষণ।

সার্বিক বিষয় বিবেচনায় রেখে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে করোনা মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোসহ ৯টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বাজেট ব্যবস্থাপনা সভা এবং আর্থিক ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই দুই ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি সিঙ্গাপুর থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সভায় যোগ দেন।

সভায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কোন খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। বাজেটে ৯টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা সভায় উল্লেখ করা হয়। সেখানে আগামী অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

যে ৯টি বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবে:-

>>বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা;
>>কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সফল বাস্তবায়ন;
>>কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা এবং ক্ষতিপূরণ;
>>অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেচ ও বীজ প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা;
>>ব্যাপক কর্মসৃজন ও পল্লী উন্নয়ন;
>>সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ;
>>গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহনির্মাণ (মুজিববর্ষের প্রধান কার্যক্রম);
>>নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা চালু রাখা;
>> এছাড়া শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন;

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ‌‘আমার কাছে মনে হয়, সরকার যৌক্তিকভাবেই বিবেচনা করছে। যেহেতু করোনার প্রাথমিক ধাক্কাটা সামাল দেয়া সম্ভব হয়েছে, এখন আমরা অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের একটি প্রক্রিয়ায় রয়েছি, সেই প্রক্রিয়াটি একটু দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের প্রক্রিয়ায় যেটি হয়, বেসরকারি খাতের বা বাজারের ওপর নির্ভরশীল অর্থনৈতিক কাঠামো দিয়ে জনগণের খাদ্য ও কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবসময় পুরোপুরি সম্ভব হয়ে উঠে না। সেই ভিত্তিতে সরকারের জায়গা থেকে অনেক ধরনের বিশেষায়িত উদ্যাগের প্রয়োজন পড়ে। আমরা সেটিরই ইঙ্গিত দেখছি। বাজেটে কর্ম-সৃজনের প্রাধিকার দেয়া, একইসঙ্গে গ্রামীণ অবকাঠামো বা সরকারের আমার গ্রাম আমার প্রকল্পের অধীনে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন, দরিদ্র মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিস্তার এগুলোর প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই কর্মসূচির ভেতরে প্রাধিকার হিসাবে কিছু বিষয় ঠিক আছে, তবে প্রত্যেকটি কর্মসূচির কিছু গুণগত ও পরিমাণগত বিষয়কে যাতে এখানে বিবেচনা করা হয়। করোনাকালে দেশে নতুন ধরনের দারিদ্র সৃষ্টি হয়েছে। কর্মসূচি হয়তো আগের মতো বিবেচনা করা হবে, কিন্তু এই যে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে; নতুন যারা প্রান্তিক মানুষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে তাদের অন্তর্ভুক্তি যেন নিশ্চিত করা হয়।’

গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয় হলো, আগের কর্মসূচি দিয়ে যে পরিমাণ সুরক্ষা যতজনকে দেয়া যেতে সেটি যেহেতু পর্যাপ্ত না, তাই সুরক্ষাকালীন কার্যক্রমগুলোর পরিমাণগত বিস্তৃতিও প্রয়োজন হবে। সেটা সংখ্যার দিক থেকে এবং এলাকার ভিত্তিতেও। নতুন নতুন এলাকা, নতুন নতুন প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেন এতে অন্তর্ভুক্ত হয়। সেটা কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে হোক, দারিদ্র বিমোচনের ক্ষেত্রে হোক বা সামাজিক সুরক্ষা, ওএমএস হোক সব জায়গাতেই এই কার্যক্রমের এলাকা ঠিক রয়েছে। একইসঙ্গে এর পরিমাণগত ও গুণগত মান যাতে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়।’

এদিকে সভায় ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্থনীতির প্রধান প্রধান সূচকে উন্নতি করে মধ্যমেয়াদী সমাজিক অর্থনৈতিক কাঠামো (এমটিএমএফ) প্রণয়ন করা হয়। এতে আগামী অর্থবছরের কিছু সম্ভাব্য সূচক তুলে ধরা হয়।

সভায় উল্লেখ করা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরে সম্ভাব্য জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, মূল্যস্ফীতির হার হবে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, মোট বিনিয়োগের হার হবে জিডিপির ৩২ শতাংশ (বেসরকারি ২৪.৫ ও সরকারি ৭.৫ শতাংশ), মোট রাজস্ব আয় হবে জিডিপির ১০ দশমিক ৮ শতাংশ, মোট ব্যয় হবে জিডিপির ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ, মোট ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, প্রাথমিক ঘাটতি জিডিপির ৪ শতাংশ এবং জিডিপি হবে ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজার রিপোর্ট – নূ/আ/সি/১লা জানুয়ারি, ২০২১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০