তারল্য সংকট নিরসনের উদ্যোগে চাঙ্গা পুঁজিবাজার

প্রচ্ছদ » খেলা » তারল্য সংকট নিরসনের উদ্যোগে চাঙ্গা পুঁজিবাজার

dse-cseপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক: গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের মতো চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও দেশের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) ইস্যুতে ব্যাংক খাতে হঠাৎ সৃষ্ট তারল্য সংকট কাটাতে গৃহীত উদ্যোগের প্রভাবেই মূলত পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড আগের দিনের চেয়ে বেশি দরে কেনাবেচা হচ্ছে। আর বেশিরভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রভাবে সবগুলো সূচকেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে ঊর্ধ্বমুখী ধারা।

সকাল সাড়ে ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুর ৩ ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক একচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৩২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৮৭টির দর বেড়ে এবং ২৪টির দর কমে লেনদেন হয়। এছাড়া আগের দিনের দরে লেনদেন হয় ২১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড।

এ সময় পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের চেয়ে ১৪০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৭৩৭ পয়েন্টে, ডিএসই-এস সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৩৮ পয়েন্টে ও ডিএসই-৩০ সূচক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।

ডিএসইর মতো একই অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। দিনের লেনদেন শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টায় সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২১০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৯১টি দর বেড়ে, ১২টি দর কমে ও ৭টি আগের দিনের দরে লেনদেন হয়।

এ সময় পর্যন্ত ডিএসইর মতো সিএসইর সবগুলো সূচকেও ঊর্ধ্বমুখী ধারা লক্ষ্য করা গেছে। দুপুর দেড়টায় সিএসই-৫০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে, সিএসই-৩০ সূচক ৩১৩ পয়েন্ট বেড়ে ১৬ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে, সিএসই-এক্স সূচক ২৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ১০ হাজার ৬৫৮ পয়েন্টে, সিএএসপিআই সূচক ৪২০ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৬৩৫ পয়েন্টে ও সিএসআই সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, এডিআর ইস্যুতে ব্যাংক খাতে সম্প্রতি হঠাৎ সৃষ্ট তারল্য সংকটের কারণে শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। অনেক প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ ক্ষমতা হারায়। ব্যক্তি শ্রেণির অনেক বড় বিনিয়োগকারী দরপতনের শঙ্কায় আগেভাগে শেয়ার বিক্রি করেন। বড় ক্রেতারা বিক্রেতার ভূমিকা নেওয়ায় নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়। ক্রমাগত দরপতনে বিনিয়োগযোগ্য অর্থ থাকার পরও অনেকে হাত গুটিয়ে রাখেন।

এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) কার্যালয়ে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সরকারের আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ব্যাংকের অর্থসংকট মেটাতে সরকারি তহবিলের ৫০ শতাংশ অর্থ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা যাবে।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের তারল্য সংকট কাটানোর এই উদ্যোগে সাড়া দিয়েছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। আর এর প্রভাবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, টানা দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বৃহস্পতিবার দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই সূচকে বড় উত্থান হয়। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৯৭ পয়েন্টে ওঠে। সূচক বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় দুই শতাংশ। লেনদেন হওয়া ৭৮ শতাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধির কারণে সূচক এতটা বৃদ্ধি পায়। গত ১১ ফেব্রুয়ারির পর একদিনে সূচক বৃদ্ধির হার এটাই ছিল সবচেয়ে বেশি।

সূত্র: শেয়ারনিউজ২৪।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *