৭৬ রান করার পথে শট খেলছেন আজহার আলী
প্রচ্ছদ » Slider || কোম্পানি সংবাদ » ৭৬ রান করার পথে শট খেলছেন আজহার আলীপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক : ক্রিকেট এমনই! চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে পাকিস্তানকে কেউ গোনায় ধরেনি। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে নাকানি চুবানি খাওয়ার পর গ্রুপ পর্ব থেকেই তাদের বিদায় দেখছিল অনেকে। আর ইংল্যান্ড টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল অন্যতম ফেবারিট হিসেবে। গ্রুপ পর্বে টানা তিন জয়ে সেমিফাইনালে আসা ইংলিশদের হাতে শিরোপাও দেখছিল কেই কেউ। সেই ইংল্যান্ডই কিনা সেমিফাইনালে পাকিস্তানের সামনে দুমড়ে-মুচড়ে গেল! ব্যাটিং কিংবা বোলিং, পাকিস্তানের কাছে ইংলিশরা পাত্তাই পেল না, স্রেফ উড়ে গেল। স্বাগতিকদের ৮ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে সরফরাজ আহমেদের দল।
কার্ডিফে বুধবার ইংল্যান্ডকে ২১১ রানে অলআউট করে পাকিস্তানের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন পেসাররা। মাঝারি লক্ষ্যটাকে পরে মামুলি বানিয়ে ফেললেন ব্যাটসম্যানরা। ফখর জামান ও আজহার আলীর উদ্বোধনী জুটিতেই আসে অর্ধেকের বেশি রান। ঠাণ্ডা মাথার ব্যাটিংয়ে দুজনই তুলে নেন ফিফটি। টানা দ্বিতীয় ফিফটি করা ফখরকে ফিরিয়ে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। ৫৮ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৫৮ রান করেন এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই অভিষেক হওয়া ফখর।
আজহার দ্বিতীয় উইকেটে বাবর আজমের সঙ্গে গড়েছেন আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি। জেক বলের স্লোয়ারে আজহার ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে প্লেড-অন হলে ভাঙে ৫৫ রানের জুটি। ১০০ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় আজহার করেছেন ৭৬। তখন জয়ের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩৯ রান। পথটা অনায়াসেই পাড়ি দিয়েছেন বাবর (৩৮*) ও মোহাম্মদ হাফিজ (৩১*)। পাকিস্তান ম্যাচ জিতেছে ৭৭ বল বাকি থাকতেই!
অথচ ম্যাচ শুরুর আগে বড় ধাক্কাই খেয়েছিল পাকিস্তান। পিঠের চোটের কারণে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েন দলের অন্যতম সেরা পেসার মোহাম্মদ আমির। বিস্ফোরক সব ব্যাটসম্যানে ঠাসা ইংলিশ ব্যাটিংয়ের সামনে আমিরকে ছাড়া পাকিস্তানের অন্য বোলাররা পেরে উঠবে কিনা, সেটা নিয়েই তখন শঙ্কা। তবে সব শঙ্কাকেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন হাসান আলী, জুনাইদ খান, রুম্মান রইসরা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই পাকিস্তানি পেসে ভুগেছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। শুরুটা করেছিলেন আমিরের জায়গায় অভিষেক হওয়া রইস। ষষ্ঠ ওভারে অ্যালেক্স হেলসকে (১৩) বাবরের ক্যাচ বানিয়ে ৩৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার। জেসন রয়ের জায়গায় দলে ফেরা জনি বেয়ারস্টো ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে জো রুটকে সঙ্গে নিয়ে ৪৬ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে প্রথমবার আক্রমণে এসেই বেয়ারস্টোকে (৪৩) ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন হাসান।
তৃতীয় উইকেটে রুট ও অধিনায়ক মরগান গড়েছিলেন ৪৮ রানের জুটি। এরপরই ১৪ রানের মধ্যে দুজনকেই সাজঘরে ফেরায় পাকিস্তান। ফাহিম আশরাফের জায়গায় দলে আসা স্পিনার শাদাব খানের বলে সরফরাজকে ক্যাচ দেন রুট (৪৬)। হাসানের বলে মরগানও (৩৩) সরফরাজের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন। ২ উইকেটে ১২৮ থেকে ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৪১! স্কোরবোর্ডে আর ৭ রান যোগ হতে আউট জস বাটলারও (৪)।
বেশিক্ষণ টেকেননি মঈন আলী আর রশিদও। বাটলারের পর মঈনকেও ফিরিয়েছেন জুনাইদ। রানআউটে কাটা পড়েছেন রশিদ। ১৮১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ইংল্যান্ড যে দুইশ পার করতে পেরেছে, সেটা বেন স্টোকসের কল্যাণে। যদিও আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা স্টোকস এদিন স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না মোটেও। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৬৪ বলে ৩৪ করা স্টোকসের ইনিংসে ছিল না কোনো চার-ছক্কা! ১৪ বলের মধ্যে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে এক বল বাকি থাকতে ২১১ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।
১০ ওভারে ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার হাসান। জুনাইদ ও রইস নেন ২টি করে উইকেট। একটি উইকেট লেগ স্পিনার শাদাব খানের। আর বোলারদের অসাধারণ বোলিংয়ের পর ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় ফাইনালের টিকিটও পেয়ে গেল পাকিস্তান। ওভালে ১৮ জুনের ফাইনালে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ হবে কে, ভারত না বাংলাদেশ?