খাওয়ার সময় যে আচরণগুলো ভদ্র

প্রচ্ছদ » Uncategorized » খাওয়ার সময় যে আচরণগুলো ভদ্র

পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক : খাওয়ার পদ্ধতি দেশ হিসেবে ভিন্ন হতে পারে। ভারতবর্ষসহ মোটামুটি অনেক দেশেই হাত দিয়েই খাওয়া হয়; চীন, কোরিয়া, জাপান, হংকং ইত্যাদি দেশে দুইটি লম্বা কাঠিকে (চপস্টিক) খাওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে। আর ইউরোপিয়ান বা আমেরিকান দেশে ছুরি-কাঁটাচামচ খাওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

অনেক সময় আমাদের অনেককেই এমন পরিবেশ কিংবা পরিস্থিতিতে পরতে হয় যেখানে চামচ-ছুরি ব্যবহার করে খাবার খেতে হয়। যারা এগুলো ব্যবহার করে খেতে অভ্যস্ত নন এসময় তাদেরকে খুব বিব্রতকর অবস্থায় পরতে হয়। আবার খেতে বসে অসংখ্য ফরমাল নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় যা আমাদের অনেকেরই অজানা। সেই কিছু ভদ্রতা বা টেবিল ম্যানার জানাচ্ছে অর্থসূচক-

ছুরি-চামচ ধরা ও খাবার কাটা:
ছুরি-চামচ ধরা ও খাবার কাটার জন্য আমেরিকান ও কন্টিনেন্টাল পদ্ধতি মোটামুটি একই। পদ্ধতিটি হলো- বাম হাতে কাঁটা চামচ দিয়া খাবার চেপে ধরুন এবং ডান হাতে ছু্রির সাহায্যে ছোট আকারে খাবার কেটে নিন।

খাবার খাওয়া:
কন্টিনেন্টাল পদ্ধতি
ডান হাতে এবং প্লেটের উপর/কাছে ছুরিটি ধরে রাখুন এবং বাম হাতে কাঁটা চামচের সাহায্যে খাবার মুখে পুরে নিন। খাবার সময় লক্ষ রাখবেন কাঁটা চামচের কাঁটা যেন সবসময় দিকে থাকে।

আমেরিকান পদ্ধতি
ছুরি প্লেটের উপরের অংশে এমনভাবে রাখুন যেন ছুরির ধারাল প্রান্তটি আপনার দিকে মুখ করে থাকে। বাম হাতের কাঁটা চামচটি ডান হাতে নিন। এবার ডান হাতে কাঁটা চামচের সাহায্যে খাবার মুখে পুরে নিন। খাবার সময় লক্ষ্য রাখবেন কাঁটা চামচের কাঁটা যেন সবসময় উপরের দিকে থাকে।

খাবারের মাঝে বিরতি:
কন্টিনেন্টাল পদ্ধতি
ছুরির ধারালো দিকটি প্লেটের দিকে মুখ করে রাখুন। তারপর কাঁটা চামচের কাঁটা অংশ নিচে দিক মুখ করে (চামচ উল্টিয়ে) আড়াআড়িভাবে ছুরির উপর রাখুন। ছুরি ও কাঁটা চামচ এঙ্গেল ( ক্রস আকৃতির) রাখার চেষ্টা করবেন।

আমেরিকান পদ্ধতি
ছুরি প্লেটের উপরের অংশে এমনভাবে রাখুন যেন ছরির ধারাল প্রান্তটি আপনার দিকে মুখ করে থাকে।তারপর কাঁটা চামচের কাঁটা অংশ উপরের দিক মুখ করে প্লেটের উপর রাখুন। ছুরি ও কাঁটা চামচের এঙ্গেল ছবির মতো রাখার চেষ্টা করবেন।

খাওয়া শেষে ছুরি-চামচের অবস্থান:
কন্টিনেন্টাল পদ্ধতি
ছুরি ও কাঁটা চামচ লম্বা-লম্বি এবং প্যারালালভাবে প্লেটের উপর রাখুন।ছুরির ধারালো দিকটি প্লেটের ইনার দিকে মুখ করে এবং কাঁটা চামচের কাঁটা অংশ নিচে দিক মুখ করে (চামচ উল্টিয়ে) রাখুন।

আমেরিকান পদ্ধতি
ছুরি ও কাঁটা চামচ লম্বালম্বি এবং প্যারালালভাবে প্লেটের উপর রাখুন। ছুরির ধারালো দিকটি প্লেটের ইনার দিকে মুখ করে এবং কাঁটা চামচের কাঁটা অংশ উপরের দিক মুখ করে রাখুন।

এবার খাবার টেবিলে বসার আগে কিছু টিপস:
খাওয়ার টেবিলে বসে অপেক্ষা করতে হলে হাত দু’টো কোলের ওপর রাখুন। আঙুল নিয়ে খেলা, প্লেটের ওপর দাগ কাটা, হাঁটু নাচানো, চুল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি একদম নয়।

খাওয়ার টেবিলে বসার পর ন্যাপকিন নিয়ে কোলের ওপর বিছিয়ে দিন। ন্যাপকিনের ভাঁজ খোলার সময় ঝাঁকাবেন না। খাওয়া শেষ হওয়া পর্যন্ত ন্যাপকিন আপনার কোলেই থাকবে। কোনও কারণে টেবিল ছেড়ে ওঠার দরকার হলে আলতো করে একে ভাঁজ করে প্লেটের পাশে রেখে দিন। খাওয়া শেষ হলে অর্ধেক ভাঁজ করে আপনার বাঁ দিকে রেখে উঠুন। ন্যাপকিন কখনও কুঁচকে, কোনও কিছুর তলায় গুঁজে রাখবেন না।

অনেকের সঙ্গে খেতে বসলে একসঙ্গে খাওয়া শুরু করুন। টেবিলে যদি কোনও খাবার পরিবেশন করতে চান, তা হলে আগে অন্যদের প্লেটে খাবারটা দিয়ে তবে নিজের প্লেটে নিন। পানীয়র ক্ষেত্রেও একই জিনিস প্রযোজ্য।

মুখ বন্ধ করে খান। খাওয়ার সময় আপনার মুখের খাবার দেখা গেলে তা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। এটা যেমন অন্যদের বিরক্তিতে ফেলে, তেমনি খাওয়ার রুচিতেও ঘাটতি আনে।

শব্দ করে খাওয়া বন্ধ করুন। এটা কোনো গর্বের বিষয় নয় যে আপনি খাওয়ার সময় সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছেন, আপনি খাচ্ছেন। যা আপনার পাশে বসা মানুষটির জন্য চূড়ান্ত অস্বস্তিদায়কও। বিষয়টি আমাদের দেশে একেবারেই গুরুত্ব না পেলেও পশ্চিমা দেশগুলোয়, যাদের সবকিছুই আমরা অনুকরণে ব্যস্ত, তাদের কাছে রীতিমত অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।

চামচ বা হাত যেভাবেই অল্প করে খাবার মুখে দিন। যত ক্ষুধার্তই হোন না কেন একবারে খুব বেশি পরিমাণ খাবার মুখে দেয়া যেমন দৃষ্টিকটু, তেমনি তা ছড়িয়ে পড়ে খাবার টেবিলে, সৃষ্টি করতে পারে বিশৃঙ্খলা।

ফ্রায়েড চিকেন কখনই চামচ দিয়ে খেতে যাবেন না। এক্ষেত্রে টিস্যু দিয়ে ধরে হাত দিয়ে খান। উঠে গিয়ে বা উবু হয়ে কনো ডিশ নেবেন না। পাশের জন কে অনুরোধ করুন।

চামচ দিয়ে স্যুপ খাওয়ার সময় পুরো চামচটাই মুখে ঢুকিয়ে দেবেন না। মুখের সামনে চামচ-ভর্তি স্যুপ এনে চামচের পাশ থেকে স্যুপ খেতে থাকুন। চামচ টি দিয়ে সুপ মুখে দেবার পুরবে বাটির উল্টো দিকে মুছে নিন। নিজের দিকে নয়।

তরল খাবার রাখা হয় সার্ভিস প্লেটের ডানে এবং সলিড খাবার বামে। এটি মনে রাখলে ভুলে পাশের জনের খাবার নিয়ে আপনি টানাটানি করবেন না।

খাবার সময় কাশি বা হাঁচি দেয়া ও নাক টানা থেকে বিরত থাকুন। বাকিদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে একটু দূরে গিয়ে হাঁচি দিন। খাবার টেবিলে শব্দ করে ঢেঁকুর তোলাও চরম বাজে অভ্যাসগুলোর একটি।

ন্যাপকিন ফ্লোরে পড়ে গেলে তা তোলার চেষ্টা করবেন না। সার্ভারকে ডাকুন এবং আর একটি ন্যাপকিন চেয়ে নিন।

এগুলো ছিল প্রাথমিক কিছু টেবিল ম্যানার বা খাবার টেবিলের নিয়মকানুন। তবে এরও আছে নানা ভাগ ও ব্যাপ্তি। যদিও সব সময়ের জন্যই উপরের কিছু নিয়ম খেয়াল রাখলেই আপনি এড়াতে পারেন বিব্রতকর পরিস্থিতি।

শুধু বহিরাবরণেই নয়, ম্যানার সচেতন থাকলে হয়ে উঠতে পারবেন আপাদমস্তক আধুনিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০