গ্রাহকদের মামলার মুখে বীমা খাতের চেয়ারম্যান-সিইও : ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা খাত
প্রচ্ছদ » Uncategorized » গ্রাহকদের মামলার মুখে বীমা খাতের চেয়ারম্যান-সিইও : ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা খাতদাবি পরিশোধে গড়িমসির কারণে গ্রাহকদের মামলার মুখে পড়ছেন বীমা খাতের চেয়ারম্যান-সিইওরা। এতে একদিকে ক্ষুণ্ন হচ্ছে বীমা খাতের ভাবমূর্তি, অন্যদিকে ঠিকমতো বীমা দাবি পরিশোধ না করায় বিপদের মুখে পড়ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক পরিবার। এ সমস্যা সমাধানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও (আইডিআরএ) কোনো সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না। বীমা প্রতিষ্ঠানের সিইও ও চেয়ারম্যানদের এভাবে মামলায় জড়িয়ে পড়াটা খাতটির জন্য ভয়াবহ। এ-সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য আইডিআরএর বিরোধ নিষ্পত্তি কমিটিকে আরো সক্রিয় হতে হবে। কোম্পানিগুলোর উচিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি পরিশোধ করা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করা উচিত। কোনো ভুল বোঝাবুঝি হলে মামলায় যাওয়ার আগে গ্রাহক ও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ উভয়েরই উচিত আলোচনায় বসা। কারণ মামলা হলে শুধু কোম্পানি নয়, বরং গোটা খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বোপরি এ ধরনের নেতিবাচক সমালোচনার কারণেই খাতটি আজ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
দুঃখজনক বিষয় হলো, সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএর কোনো তত্পরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। বীমা খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও যাবতীয় কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য সরকার আইডিআরএ গঠন করে। তারা কিছু নিয়ম-কানুনও প্রণয়ন করে। কিন্তু খাতটি যেন এখনো নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে রয়েছে। অভিযোগ ও প্রতারণার ঘটনা ঘটেই চলছে। এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের সিইও ও চেয়ারম্যানদের নামে মামলা এবং সেটি ঠেকাতে জেলায় জেলায় হাজিরা দিতে হলে কোম্পানির স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এটি মোকাবেলায় বীমা কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য গঠিত বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কার্যক্রম আরো জোরদার করা চাই। গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধে আইডিআরএর তদারকি জোরদার এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ব্যাংকিং খাতে এ ধরনের অভিযোগের নিষ্পত্তি হলে বীমা খাতে কেন হবে না, তা কারো বোধগম্য নয়।
স্বাধীনতার পর সাধারণ বীমা ও জীবন বীমা দিয়ে যাত্রা দেশের বীমা খাতের। পরে আশির দশকে শুরু হয় বেসরকারি খাতে বীমার যাত্রা। কিন্তু গেল কয়েক দশকেও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারেনি বীমা খাত। পাশের দেশ ভারতে জিডিপিতে বীমা খাতের অবদান ৫-৬ শতাংশ হলেও বাংলাদেশে তা ১ শতাংশের নিচে। গ্রাহক আস্থা অর্জনও করতে পারেনি বীমা খাত। এর জন্য চাই সুশৃঙ্খল বীমা খাত, যা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও কোম্পানিগুলোর কাজের মাধ্যমে।