টাঙ্গাইলে উচ্ছেদ আতঙ্কে ৫ হাজার পরিবার

প্রচ্ছদ » Uncategorized » টাঙ্গাইলে উচ্ছেদ আতঙ্কে ৫ হাজার পরিবার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরুতেই বাধার মুখে পড়েছে। স্থানীয় সাতটি গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার উচ্ছেদ আতঙ্কে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) টাঙ্গাইল অংশে নিউ ধলেশ্বরীর মুখে প্রকল্পের ‘সিল্ট বেসিন’ কাজের উদ্বোধন ভণ্ডুল করে দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্পের টাঙ্গাইল অংশে কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়ায় নিউ ধলেশ্বরীর মুখে প্রকল্পের ‘সিল্ট বেসিন’ নির্মাণকাজ উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে লক্ষ্যে স্থানীয়দের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু অধিগ্রহণ করা হয়নি।

শুক্রবার সকালে প্রকল্পের ‘সিল্ট বেসিন’ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করতে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ বেলটিয়া গ্রামে ধলেশ্বরীর মুখে যান।

সেখানে ‘লাল পতাকা’ টাঙিয়ে ‘সিল্ট বেসিন’ নির্মাণকাজের উদ্বোধনের উদ্যোগ নেন। পাশেই খনন কাজের জন্য দুইটি ড্রেজার মেশিন বসানো হয়। নদীর ওই অংশে খনন করলে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় মুহূর্তের মধ্যে কয়েক হাজার চরবাসী লাঠিসোটা নিয়ে ‘চর বাঁচাও, জীবন বাঁচাও’ স্লোগান দিতে দিতে একত্র হয়ে সিল্ট বেসিন নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।

তারা উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর আক্রমণের উদ্যোগ নিলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হজরত আলী তালুকদারের তৎপরতায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। টাঙানো লাল পতাকা উঠিয়ে দূরে ফেলে দেয়।

হামলার আশঙ্কায় ড্রেজার মেশিন দুইটি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া হয়। খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি দেখে তারা আবার বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। পরে চরাঞ্চলবাসীর ভূমি অধিগ্রহণের নিশ্চয়তা দেয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

চরবাসী জানান, নদী খনন তারাও চান। কিন্তু যেখানে সিল্ট বেসিন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, এতে তাদের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হবে। বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনে অনেকেই ঘরবাড়ি হারাবে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগে তারাও শরিক হতে চান। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ না করা হলে তারা পথে বসবেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের।

ইতোপূর্বেও নদী খনন করতে এসে জমি অধিগ্রহণের কথা বলে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। ওই সময় তারা কেউ অধিগ্রহণের টাকা পাননি। তাদের স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে একটি করে নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কাজের আগে জমি অধিগ্রহণ করে টাকা পরিশোধ না করলে আর অধিগ্রহণের টাকা পাবেন না বলেও জানান তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *