ঢল নেমেছে অতিথি পাখির

প্রচ্ছদ » Uncategorized » ঢল নেমেছে অতিথি পাখির

baikka-billমৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি হাওর ও শ্রীমঙ্গলে পাখির অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলে এবারও অতিথি পাখির ঢল নেমেছে। প্রতিদিন এখানে নতুন নতুন পাখি দেখা যাচ্ছে। পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠেছে হাকালুকি হাওর ও বাইক্কা বিল। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত নানা প্রজাতির হাজার হাজার অতিথি পাখি প্রতিদিনই এখানে খেলা করছে। বিভিন্ন আকার ও রঙের অগণিত পাখির আগমনে এসব এলাকায় এসেছে নতুন মাত্রা।

প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পযন্ত বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখির কলকাকলিতে হাকালুকি হাওর ও বাইক্কা বিলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে । এ বছর মৌলভীবাজারে মোট ৫০হাজার ৫১৮টি পাখির আগমন হয়েছে। তার মধ্যে হাকালুকিতে ৪৪ প্রজাতির ৪৫ হাজার ১০০টি পাখি এবং বাইক্কাবিলে ৩৮ প্রজাতির ৫ হাজার ৪১৮ টি পাখির দেখা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব।

মৌলভীবাজারের প্রতি বছর শীত মৌসুমে হাকালুকি ও বাইক্কা বিলে ভিড় করে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি। সম্প্রতি পাখি শুমারি করে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব। এতে বাইক্কা বিলে ৩৮ প্রজাতির ৫ হাজার ৪১৮ টি পাখি মিলে। যার মধ্যে- পাতি তিলা হাঁস ১ হাজার ৫৮০টি, বালি হাঁস পাওয়া গেছে ৩২৭টি, পৃথিবী থেকে প্রায় বিপন্ন ভুতি হাঁস ১৮৮ টি, পানকৌড়ি ১২৮টি।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে ৪৪ প্রজাতির মোট ৪৫ হাজার ১০০টি পাখি পাওয়া গেছে । যার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হারে পিয়ানং হাঁস, পাতি তিলা , বালি হাঁস , ভুতি হাঁস , পানকৌড়ি , কালোকুট, পাতি পান মুরগি, বেগুনি কালেমসহ অনেক ধরনের পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে।

তবে এ বছর পাখির সংখ্যা অন্যান্য বছর থেকে কমে গেছে বাইক্কা বিল ও হাকালুকি হাওরে। বাইক্কা বিল নিয়ে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইকোসিষ্টেম অ্যান্ড লাইভলিহুড (ক্রেল)। তাদের তথ্যে জানা যায়, পাখি শুমারিতে গত বছর বাইক্কা বিলে ৪১ প্রজাতির ১০ হাজার ৭১৩টি পাখি পাওয়া যায়। কিন্তু এ বছর যা অর্ধেকে নেমে এসছে। বাইক্কা বিলের পাখি ,মাছ ও জলজ উদ্ভিদ রক্ষায় ২০০৩ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রায় আড়াইশ একর আয়তনের বাইক্কা বিলকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করে।

গত বছরের বন্যায় জলজ উদ্ভিদ উৎপাদন ব্যাহত হয়। বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই বছর শেষে ডিসেম্বরে ভারি বৃষ্টিতে বিলের পানি বেড়ে যায়। ফলে পানির নিচে ডুবে যায় জলজ সবুজ উদ্ভিদ। পদ্ম ঢোলকলমি বিলকে ঘিরে যে সবুজের জঙ্গল তৈরি হয় তাও হয়নি বিভিন্ন উদ্ভিদ মরে যাওয়ায়। এতে দেখা দেয় পাখির খাদ্যের অভাব। বিশেষজ্ঞরা খাবারের অভাবকেই পাখি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে দেখছেন।

হাকালুকিতেও পাখি কমার কারন হিসেবে বন্যার পাশাপাশি বিষটোপ এবং বিভিন্ন উপায়ে শিকারকেই দায়ী করা হচ্ছে। কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিসার সুলতান মাহমুদ জানান, হাকালুকিতে পাখি কমার অন্যতম কারণ বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার। তাই গত বছরের তুলনায় এ বছর পাখি কম এসেছে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) মিহির কুমার দে জানান, এ বছর পরিযায়ী পাখি অনেক কম। কেন কম এ বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান থাকবে সেটা চিহ্নিত করা।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত দিপু বলেন, হাকালুকিতে পাখি কমার একমাত্র কারণ মানুষ। গণহারে বিল লিজ দেয়ার কারণে মানুষ বিলে অবস্থান করে পাখি তাড়িয়ে দিচ্ছে এবং শিকার করছে।

তিনি আরও জানান, পাখি প্রাকৃতিকভাবে যেকোনো বিল বা হাওরের জন্য উপকারী। বিশ্বের বিভিন্ন যায়গায় দেখা গেছে পাখি না থাকলে মাছ এবং ফসলের ফলন কমে যায়। কারণ পাখির বিষ্ঠা উন্নত জৈবিক সার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০