শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে নীতিসহায়তা চেয়ে এনবিআরে বিএমবিএ’র প্রস্তাব

প্রচ্ছদ » Uncategorized » শেয়ারবাজারকে গতিশীল করতে নীতিসহায়তা চেয়ে এনবিআরে বিএমবিএ’র প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক : দীর্ঘদিন ধরে বাজার বিমূখ হোয়া বিনিয়োগকারী এবং প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকরীদের সক্রিয় করে দেশের শেয়ারবাজার গতিশীল করতে আসন্ন ২০১৭-১৮ বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) নীতিসহায়তার চেয়ে ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।

প্রস্তাবনায় পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ দেয়াসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছে বিএমবিএ। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ও ভ্যাট সুবিধা, ইন্টারমিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট করহ্রাস, ঋণাত্মক ইকুইটির মার্জিন হিসাবের বিপরীতে ধার্য অনাদায়ী সুদ আয়ে কর মওকুফ, বিনিয়োগকারীর মূলধনি মুনাফার ওপর করহ্রাস করার জন্য এনবিআরের প্রতি আহবান জানিয়েছে বিএমবিএ।

গত ২০ মার্চ বিএমবিএ’র পক্ষ থেকে শেয়ারবাজারকে গতিশীল করা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ বাজারকে কাজে লাগাতে আসন্ন ২০১৭-১৮ বাজেটে কিছু নীতিসহায়তার প্রস্তাব দেয়া হয়।

সংগঠনের সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার আবু তাহের মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে বিএমবিএ বলেন, ২০১০ সালের বিপর্যয়ের পর টানা একটি নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল দেশের শেয়ারবাজার। অল্প সময়ের ব্যবধানে বেশকিছু রেগুলেটরি সীমাবদ্ধতা চলে আসায় বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়, যার প্রভাবে অন্য বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ও অংশগ্রহণও কমে যায়। দীর্ঘ মন্দার পর সাম্প্রতিক সময় আমরা পুঁজিবাজারে কিছু গতি দেখতে পেয়েছি। তা ধরে রেখে পুঁজিবাজারকে শিল্পায়ন, অবকাঠামো, কর্মসংস্থান তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। আমরা মনে করি, এজন্য কিছু নীতিগত সহায়তা দরকার।

আসন্ন ২০১৭-১৮ বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে আমরা নিম্নলিখিত সমর্থনগুলোর প্রস্তাব করছি। প্রথমত. বিনা শর্তে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ। আমাদের অর্থনীতিতে অনেক অপ্রদর্শিত অর্থ আছে, যেগুলো করের আওতাবহির্ভূত। অপ্রদর্শিত হওয়ায় মালিকরা এ অর্থ কোনো উত্পাদনশীল খাতে বিনিয়োগ না করে বিভিন্ন অনুত্পাদনশীল বা আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছেন। কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত না হলে তারা যদি এ অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন, বিপুল অংকের এ টাকা অর্থনীতির মূল ধারায় ফিরে আসবে, শেষ পর্যন্ত যা উত্পাদনশীল খাতে কাজে লাগানো সম্ভব। বিষয়টি একদিকে অর্থনীতি স্থিতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে, অন্যদিকে সরকারের জন্যও রাজস্ব বাড়াবে।

দ্বিতীয়ত. ঋণাত্মক ইকুইটির বিওতে মার্জিন ঋণের বিপরীতে ব্রোকার-মার্চেন্ট ব্যাংকের অনাদায়ী সুদের ওপর কর মওকুফ। চিঠিতে বিএমবিএ বলে, ঋণাত্মক ইকুইটির বিও হিসাবের বিপরীতে অনেক ব্রোকার-মার্চেন্ট ব্যাংকের পাওনা সুদ অনাদায়ী রয়েছে। এগুলো হিসাবভুক্ত করা হলেও পরিস্থিতির কারণে তা আদায় করা যাচ্ছে না। কিন্তু কর কর্তৃপক্ষ সেসব পাওনাকে আয় ধরে তার ওপর কর ধার্য করছে। এছাড়া সরকারের প্রণোদনা স্কিমের আওতায় অনেক ব্রোকার-মার্চেন্ট ব্যাংক সুদ বাবদ সেসব নিট পাওনায় ছাড় দিয়েছে। সেগুলোকেও আয় ধরে তার ওপর করারোপ করা হচ্ছে, যা প্রতিকূল সময়ে ইন্টারমিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আর্থিক চাপ আরো বাড়াচ্ছে। প্রায় আদায় অযোগ্য আয়ের ওপর এ করারোপ থেকে অব্যাহতি দেয়া দরকার।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট করে সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাবে বিএমবিএ বলে, বর্তমানে তালিকাভুক্তির সুবাদে শেয়ারবাজারের কোম্পানিগুলো ১০ শতাংশ কর সুবিধা পায়। বাজারে আরো ভালো কোম্পানি আনতে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করপোরেট করের ব্যবধান অন্তত ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। কারণ তালিকাভুক্ত কোম্পানির হিসাব তুলনামূলক স্বচ্ছ এবং তাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় সরকারের জন্য তুলনামূলক সহজ। তাদের কর সুবিধা বাড়ালে বিনিয়োগকারীরাও উপকৃত হবেন।

এছাড়া বর্তমানে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিকে একই হারে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। আমরা মনে করি, হিসাবের স্বচ্ছতার কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে সরকার প্রকৃত অর্থে তুলনামূলক বেশি হারে কর ও ভ্যাট পায়। এসব কোম্পানির জন্য ৪০ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ তালিকাভুক্তি উত্সাহিত করে শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের জন্যও যেমন সুবিধা বয়ে আনবে, তেমনি সরকারের জন্যও রাজস্ব আহরণ বাড়াবে।

সব ইন্টারমিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একই হারে করপোরেট করের প্রস্তাব করেছেন মার্চেন্ট ব্যাংকাররা। বিএমবিএর চিঠিতে বলা হয়, বর্তমানে শুধু সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানিগুলো সর্বনিম্ন ১৫ শতাংশ হারে করপোরেট করের সুবিধা ভোগ করছে। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংককে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট কর দিতে হয়। ব্যবসায় সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর করহারও ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত।

এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ উত্সাহিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফার ওপর আরোপিত কর ১০ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা উচিত বলেও মনে করে বিএমবিএ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০