অলিম্পিক এক্সেসরিজের শ্রম আইন লঙ্ঘন

প্রচ্ছদ » Uncategorized » অলিম্পিক এক্সেসরিজের শ্রম আইন লঙ্ঘন

নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্রম আইন লঙ্ঘন করে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি অলিম্পিক এক্সেসরিজ লিমিটেড। কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির বছর ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে শ্রম আইন অনুসারে ওয়ার্কার প্রোফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) হিসাব না করে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ফলে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) প্রভাব পড়েছে। কোম্পানির বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, অলিম্পিক এক্সেসরিজ কোম্পানি ৩০ জুন ০১৬ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে ওয়ার্কার প্রোফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের কোনো হিসাবনা করেনি। শুধু ২০১৬ সাল নয় ২০১৫ সালেও প্রতিষ্ঠানটি শ্রম আইন লঙ্গন করেছে। ওই বছরের ডব্লিউপিপিএফ কোনো হিসাব করেনি।

অথচ ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ৪২ (১) ধারা অনুযায়ী প্রকৃত মুনাফার ৫ শতাংশ হারে শ্রমিক ফান্ড গঠন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে করে আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ৩০ জুন ২০১৬ সালে কোম্পানির প্রকৃত মুনাফা হয়েছে ২০ কোটি ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ১০ টাকা। এই হিসাবে ডব্লিউপিপিএফ ফান্ডের পরিমান দাড়ায় এক কোটি ৭৯ হাজার ৭০০ টাকা। এই টাকা বাদ দেয়ার পর করপূর্ববর্তী মুনাফা থাকে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৬৫ হাজার ৫২৩ টাকা। এখান থেকে কর বাদ দিলে যা থাকবে সেই হিসাবে কোম্পানির প্রকাশিত শেয়ার প্রতি আয় আরো কমে যাবে। একইভাবে ৩০ জুন ২০১৫ সালের হিসাব করলে দেখা যায়, ট্যাক্স ও ডব্লিউপিপিএফ এর পূর্ববর্তী মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৯৬ লাখ ৭৫ হাজার ২০০ টাকা। ডব্লিউপিপিএফ এর অবদান ৫ শতাংশ হারে হিসাব করলে ফান্ডের পরিমান দাড়ায় ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ টাকা। এই হিসাবে প্রকৃত আয় থেকে ফান্ডের টাকা বাদ দিলে কোম্পানির প্রকাশিত ইপিএসের পরিমান কমে যাবে।

কোম্পানিটি আইপিওতে আসার সময় প্রসপেক্টাসের আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় ৩০ জুন ০১৪ সালে ডব্লিউপিপিএফ ফান্ডের হিসাব করে প্রতিবেদন তৈরি করেছে। আলোচ্য হিসাব বছরে এই শ্রমিক কল্যান ফান্ডের হিসাব ধরা হয়েছে ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮৩ টাকা। প্রশ্ন হচ্ছে প্রাথমিক গণ প্রস্তাবে (আইপিও) আসার আগে শ্রমিক কল্যান ফান্ডের হিসাব করা হয়েছে। বাজারে তালিকাভুক্তির পর এই হিসাব উধাও হয়ে গেছে। মুনাফা বাড়িয়ে দেখানোর জন্যই কি এই আইন লঙ্গন করেছে অলিম্পিক এক্সেসেরিজ।

এ বিষয়ে কোম্পানির সচিব মো. হাবিবুল্লাহ সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডটককে বলেন, শ্রম আইনে শ্রমিক কল্যান ফান্ড রাখার বিষয়ে নতুন একটি গাইডলাইন তৈরি হয়েছে।এক্সেসরিজ কোম্পানির ক্ষেত্রে রফতানির উপর একটি নির্ারিত হারে শ্রমিক কল্যান ফান্ডের জন্য টাকা কেটে রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক । নতুন গাইডলাইন প্রকাশ না হওয়ার কারণে আমরা ফান্ডের টাকার িহসাব রাখতে পারিনি।টাকা কী হারে রাখব কত টাকা রাখব এই বিষয়টি জানা না থাকার কারণে শ্রমিক কল্যান ফান্ডের টাকার হিসাব করা হয়নি।

জানা গেছে, কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধন ১৪০ কোটি ১০ লাখ টাকা ও অনুমোদিত মূলধন ১৫৫ কোটি টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৪ কোটি ১ লাখ ৪ হাজার ৯৪৪টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৫ দশমিক ৭২ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিকের হাতে রয়েছে ২২ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫১ দশকি ৫৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০.৩৯ টাকা। গত বছরের একই সময়ে যা ছিল ০.৩৭ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) হয়েছে ১৭.০৯ টাকা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৬.৭০ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *