আইন লঙ্গন করেছে বিডিকম
প্রচ্ছদ » Uncategorized » আইন লঙ্গন করেছে বিডিকমনিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ একাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড আইন লঙ্গন করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিডিকম অনলাইন লিমিটেড। শুধু তাই নয় অনাদায়ী পাওনা রাইট অফ করলেও বিনিয়োগকারীদের কাছে এ বিষয়টি গোপন করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া অনাদায়ী পাওনা আদায়ের সক্ষমতাও কমছে প্রতিষ্ঠানটির।
আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা দেখিয়ে আবার সেখান থেকে অনাদায়ী পাওনার জন্য ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রভিশন করেছে। ব্যালেন্স সিটে ক্রেডিট পাশে প্রভিশনের এই টাকা দেখানোর কথা থাকলেও তা দেখায়নি। প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষ বলছে এই টাকা রাইট অফ অর্থাৎ বাদ দেওয়া হয়েছে। কেনো বাদ দেয়া হল তার কোনো যৌক্তিক কারণ বা কোনো ধরণের ব্যাখা দেয়া হয়নি।
বিডিকম অনলাইনের ৩০ জুন ২০১৬ অর্থবছরে বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি মোট মুনাফা থেকে ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রভিশন করেছে। অর্থাৎ মুনাফা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই প্রভিশনের টাকা ব্যালেন্স সিটের ক্রেডিট পাশে দেখানোর কথা কিন্তু তা না করে হিসাব মিলানোর জন্য মোট অনাদায়ী পাওনা থেকে বাদ দিয়েছে। কিন্তু এই বাদ দেয়ার কথা কথাও উল্লেখ নেই।
আইন অনুযায়ী কোনো কোম্পানি রাইট অফ বা হিসাব থেকে বাদ দিলে তার যৌক্তিক কারণ দেখাতে হয় এবং তা প্রকাশ করতে হয় কিন্তু কোম্পানিটি তা করেনি। একই কাজ করেছে তার আগের বছর। মোট পাওনা থেকে কুঋণ বাদ না দিলেও তারা এক লাখ ৭৯ হাজার টাকার বেশি প্রভিশন করেছে। রাইট অফ করলে মোট পাওনা থেকে বাদ দিতে হবে। কিন্তু তারা কোনো হিসাব বা কোনো ধরণের নোট দেইনি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগের সাযোগী অধ্যাপক এনামুল হুদা পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডটকমকে বলেন, কোনো কোম্পানি রাইট অফ করলে আইন অনুযায়ী তার ব্যাখা দিতে হবে। এছাড়া তা বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রকাশ করতে হবে। কেউ ইচ্ছা করল আর হিসাব থেকে বাদ দিয়ে দিল তা-হবে না। এটি আইনের লঙ্গন। কোম্পানিকে অবশ্যই যৌক্তিক কারণ ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে।
এ বিষয়ে কোম্পানির সেক্রেটারি এ কে এম কুতুব উদ্দিন সাথে কথা বলা হলে তিনি পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডটকমকে বলেন, এই বিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে পারব না। তিনি একাউন্সের একজন কর্মকর্তার সাথে বসিয়ে দিয়ে বলেন, পুঁজিবাজার রিপোর্ট কি জানতে চায় তার জবাব দেন। এই কর্মতার কাছে প্রভিশনের ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যালেন্স সিটি আছে। তিনি অনেক সময় ধরে বার্ষিক প্রতিবেদনে খোজা খুজি করে না পেয়ে বললেন আপনাকে যা বলার সেক্রেটারি বলবেন। সেক্রেটারি কুতুউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ও (কর্মকর্তা) আপনাকে বলেনি। আবার তাকে ডেকে আনা হল। এবার এসে বললেন এই টাকা আমরা রাইট অফ করেছি। আমরা অনেকবার পাওনাদারদের সাথে যোগাযোগ করেছি কোনো সাড়া পাইনি, পাওয়ার সম্ভবনাও নাই তাই রাইট অফ বা বাদ হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। কোনো নোট নেই বিনিয়োগকারীরা কিভাবে বুঝবেন যে রাইট অফ করা হয়েছে এর কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
কোম্পানিটি ২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠাটির মোট শেয়ার সংখ্যা চার কোটি ৪৩ লাখ ৬ হাজার ৭৯৫টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিকের হাতে রয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ পাবলিকের হাতে রয়েছে।
সর্বশেষ প্রকাশিত তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২০ পয়সা এবং শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (ন্যাভ) দায়িছে ১৪ টাকা ৫ পয়সা।