চাকরির জন্য আর শহরে আসতে হবে না, গ্রামেই মিলবে চাকরি

প্রচ্ছদ » Uncategorized » চাকরির জন্য আর শহরে আসতে হবে না, গ্রামেই মিলবে চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের জনগণকে চাকরির জন্য আর শহরে আসতে হবে না, গ্রামেই মিলবে চাকরি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা গ্রামগুলোকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। বর্তমানে ১ হাজার ৪০০ প্রকল্প চলমান আছে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে গ্রাম আর গ্রাম থাকবে না। ১০০টি বিশেষ ইকোনোমিক জোনও গ্রামেই হচ্ছে। এখানে হাজার হাজার বেকারের কর্মসংস্থান হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশে ৩০ মিলিয়ন মধ্যবিত্ত মানুষ আছে। এই সংখ্যা ভারত ও চীনে অনেক বাড়ছে। সে অনুয়ায়ী আমাদের দেশে বাড়ছে না। মিডল ইনকাম গ্রুপ আরো বাড়াতে হবে। এই সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছে সরকার। বাংলাদেশ এখন এশিয়ান টাইগার। ২০৪০ সালে ১০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে। তখন মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১৩ হাজার ৯০ মার্কিন ডলার, বর্তমানে যা আছে ১ হাজার ৬১০ ডলার। আমরা টেকসইভাবে অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছি এবাং আমাদের সক্ষমতা ভালো।

বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকার নিজে ব্যবসা করবে না, তবে পরিবেশ সৃষ্টি করবে। সেই পরিবেশ ইতোমধ্যেই দেশে সৃষ্টি হয়েছে। জার্মানি বিদ্যুৎ খাতে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। নগরীর ঝিলমিল প্রকল্পে মালয়েশিয়া-অস্ট্রিয়া ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। নতুন নতুন বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক এখন বাংলাদেশের দিকে।

সংবাদ সম্মেলনে দেশে খাদ্য শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

বিবিএস জানায়, চলতি অর্থবছরে ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়েছে। গত অর্থবছরে যা ছিলো ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন। এবার প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন সবজি বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

তারপরও কেন সবজির দাম কমছে না, এ প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৃষ্টির কারণে সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে। এছাড়া গ্রাম থেকে শহরে সবজি আসতে পরিবহণ ভাড়া বেশি। আমাদের ব্যবসায়ীদের লাভ করার প্রবণতাও অধিক। একবার কোনো পণ্যের দাম বাড়লে আর কমে না।

সংবাদ সম্মেলনে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক ২০১৫-২০১৬ অর্থবছর ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আউশ, আমন ও বোরো ধান এবং গম, ভুট্টা ও আলুর উৎপাদনের হিসাব তুলে ধরেন।

মোজাম্মেল হক জানান, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২২ দশমিক ৮৮ লাখ মেট্রিক টন আউশ ধান উৎপাদন হয়েছিল। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা ২১ দশমিক ৩৩ লাখ মেট্রিক টনে নেমে আসে।

তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমন উৎপাদন বেড়েছে। এই অর্থবছরে ১৩৬ দশমিক ৫৬ লাখ মেট্রিক টন আমন উৎপাদন হয়েছে, যা আগের অর্থবছর ছিল ১৩৪ দশমিক ৮৩ লাখ মেট্রিক টন।

আগাম বন্যায় এবার বোরো ধানের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান বিবিএস সচিব।

মার্চ থেকে মে- এই তিন মাস বাংলাদেশে বোরোর চাষ হয়। গত অর্থবছর এই মৌসুমে ১৮৯ দশমিক ৩৭ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছিল। এবার বন্যার কারণে তা কমে হয়েছে ১৮০ দশমিক ১৩ লাখ মেট্রিক টন।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে গম উৎপাদনও আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩৬ হাজার মেট্রিক টন কমেছে বলে জানান মোজাম্মেল হক।

তবে গত অর্থবছর আলুর উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যেখানে ৯৪ দশমিক ৭৪ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছিল, সেখানে ২০১৬-১৭ সময়ে হয়েছে ১০২ দশমিক ১৫ লাখ মেট্রিক টন।

বেড়েছে ভুট্টার উৎপাদনও। আগের অর্থবছরের ২৪ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন থেকে হয়েছে ২৭ দশমিক ৫৮ লাখ মেট্রিক টন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব জিয়াউল ইসলাম, বিবিএসের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য জুয়েনা আজিজ, আইএমইডি সচিব মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *