বাংলাদেশের জয় কেড়ে নিলেন হোপ

প্রচ্ছদ » Uncategorized » বাংলাদেশের জয় কেড়ে নিলেন হোপ

hopeপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক: ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ২৫৫ রানের পুঁজিটা খুব বড় ছিল না। তবে বাংলাদেশের বোলাররা ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ালেন শাই হোপ। বলতে গেলে একাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেনে নিলেন এই ওপেনার। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার ১৪৬ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে ২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের এক শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছে ক্যারিবীয়রা। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে পাওয়েলের দল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য ২৫৬ রানের। ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে এলবিডব্লিউ করে শুরুতেই আঘাত হেনেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৫ রানে ১ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন ড্যারেন ব্রাভো আর শাই হোপ। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন তারা।

অবশেষে চোখ রাঙানো জুটিটি ভাঙেন রুবেল হোসেন। বাঁহাতি ড্যারেন ব্রাভোকে (২৭) বোকা বানিয়ে পেছন দিকের ডেলিভারিতে লেগস্ট্যাম্প ভেঙে দেন ডানহাতি এই পেসার। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে মারলন স্যামুয়েলসকে নিয়ে আবার প্রতিরোধ গড়েন শাই হোপ।

শাই হোপ আর মারলন স্যামুয়েলসের জমে উঠা তৃতীয় উইকেট জুটিটি অবশেষে ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। তারা ৬২ রান যোগ করেন। মোস্তাফিজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ হন ২৬ রান করা স্যামুয়েলস।

আরও বিপদে পড়তে পারতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রুবেলের পরের ওভারে সিমরন হেটমায়ারের ক্যাচ ফেলে দেন ইমরুল কায়েস। তবে জীবন পাওয়া হেটমায়ার বেশিদূর এগোতে পারেননি। ১৪ রানে রুবেল হোসেনের দ্বিতীয় শিকার হন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

পরের ওভারেই ক্যারিবীয় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মাশরাফি বিন মর্তুজা। পাওয়েল করেন মাত্র ১ রান। রস্টন চেজ (৯) সাজঘরে ফেরেন মোস্তাফিজকে তুলে মারতে গিয়ে।

এরপর সপ্তম উইকেটে কিমো পলকে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়েন হোপ। যে জুটিতে পলের অবদান ছিল মাত্র ১৮ রান। ১৪৪ বলে ১২ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ১৪৬ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছেড়েছেন হোপ।

বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজু রহমান আর রুবেল হোসেন। একটি করে উইকেট মাশরাফি আর মেহেদী হাসান মিরাজের।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে মোটে ২৫৫ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। ম্যাচের মাত্র নবম বলেই মাঠ ছাড়তে হয় দলের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন দাসকে। তবে নিজের উইকেট হারিয়ে নয়, গোড়ালিতে গুরুতর ব্যথা পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

ক্যারিবীয়ান গতি তারকা ওশেন থমাসের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে দ্রুতগতির ইয়র্কারটি সামাল দিতে পারেননি লিটন। তার করা ফ্লিক শটটি গিয়ে আঘাত হানে সরাসরি লিটনের পায়ের গোড়ালির পাশের অরক্ষিত অংশে।

পড়িমড়ি করে এক রান সম্পন্ন করলেও নন স্ট্রাইক প্রান্তের পপিং ক্রিজ ছুঁয়েই মাটিতে শুয়ে পড়েন লিটন। পায়ের ব্যথার আর উঠে দাঁড়াতে পারেননি তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে দলের ফিজিও এসে পর্যবেক্ষণ করেন তার অবস্থা। ব্যথা গুরুতর দেখে স্ট্রেচারে করে তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় লিটনকে।

উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লিটন সাজঘরে ফিরে যাওয়ায় উইকেটে আসতে হয় ইমরুল কায়েসকে। মাঠ ছাড়ার আগে ১ চারের মারে ৭ বল থেকে ৫ রান করেছেন লিটন।

দুই ম্যাচেই নির্ভার থেকে খেলার সুযোগ ছিল বাংলাদেশ দলের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের সামনে। কিন্তু দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে অন্তত ৪ রান করতে পেরেছিলেন, কিন্তু আজ দ্বিতীয় ম্যাচে রানের খাতাও খুলতে পারেননি ইমরুল।

Hope

প্রথম ম্যাচে ওশেন থমাসের বলে সরাসরি বোল্ড হয়েছিলেন তিনি। আর এবার ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। আউট হওয়ার আগে এলোমেলো ব্যাটিংয়ে খেলেছেন মোট ৬টি বল। তার বিদায়ে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম।

লিটন-ইমরুলকে হারানোর ধাক্কা সামলে তামিমকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মুশফিক। তামিমের পরে নামলেও ব্যক্তিগত পঞ্চাশ তার আগেই পেয়ে যান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৪ চারের মারে ৬২ বলে ক্যারিয়ারের ৩২তম ফিফটি করেন তিনি।

মুশফিকের পরপরই ৬১ বল খেলে ৪ চার ও ১ ছক্কার মারে ৪৩তম পঞ্চাশ করেন তামিম। তবে ফিফটি করার পরপরই দেবেন্দ্র বিশুর বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেট হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন বাঁহাতি এই ড্যাশিং ওপেনার।

এরপর মুশফিকও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। থমাসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে তিনি ফেরেন ৬২ রানে। ৮০ বলের ইনিংসটি ৫ বাউন্ডারিতে সাজিয়েছিলেন দলের এই ব্যাটিং ভরসা।

তবে চতুর্থ উইকেটে আবারও হাল ধরেন সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই উইকেটে তারা যোগ করেন ৬১ রান। ৪১তম ওভারে এসে এই জুটিটি ভাঙেন রভম্যান পাওয়েল। তাকে তুলে মারতে গিয়ে বল আকাশে ভাসিয়ে দেন মাহমুদউল্লাহ। ৫১ বলে ৩ চারে ৩০ রান করেন তিনি।

সাতে নেমে সৌম্য সরকার আরও একবার ব্যর্থ। থমাসের বলে পছন্দের পেরিস্কোপ খেলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের সামনে ধরা পড়েন তিনি, করেন ৮ বলে ৬ রান। ২০৮ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বড় পুঁজি গড়ার স্বপ্নটা তখনই বিলীন হবার পথে।

এমন মুহূর্তে আবারও ব্যাটিংয়ে নেমে যান চোটের কারণে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া লিটন দাস। এরই মধ্যে ছক্কা মেরে নিজের ৪০তম ফিফটি পূরণ করেন সাকিব। থমাসের ওই বলটি অবশ্য ফ্রি-হিট ছিল। আগের বলে মারতে গিয়ে ক্যাচ হয়েছিলেন ৪৬ রানে থাকা সাকিব। তবে আম্পায়ার ডেলিভারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘নো’ কল দেন। ওভারস্টেপিং করেছিলেন থমাস।

লিটনকে নিয়ে জুটিতে ১৭ বলেই ২৬ রান তুলে ফেলেছিলেন সাকিব। যে জুটিতে অবশ্য লিটনের তেমন অবদান ছিল না। ১৪ বলে ৮ রান করে কেমো পলকে ছক্কা মারতে গিয়ে সিমরন হেটমায়ারের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

শেষদিকে এসে বেশ বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বোলিং করেছে ক্যারিবীয়রা। সময়ের প্রয়োজনে মারমুখী খেলতে গিয়ে ৬২ বলে ৬ চার আর ১ ছক্কায় ৬৫ রান করে সাকিব বোল্ড হন কেমার রোচের বলে।

এরপর আর বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে পারেননি মাশরাফি-মিরাজরা। শেষ দুই ওভারে মাত্র ৫ রান নিতে পারেন তারা। ১১ বলে ৬ রান করেন মাশরাফি আর ১০ বলে ১০ রান আসে মিরাজের ব্যাট থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০