বিএসইসিকে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যাখ্যা, বিনিয়োগকারীর অভিযোগ ভিত্তিহীন
প্রচ্ছদ » বাজার বিশ্লেষন » বিএসইসিকে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যাখ্যা, বিনিয়োগকারীর অভিযোগ ভিত্তিহীননিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেক জানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিনয়োগকারীর অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়ার বিষয়ে এক বিনিয়োগকারীর চিঠির জবাবে এ ব্যাখ্যা দিয়েছে কোম্পানি।
নাজমুন নাহার সানজিদা নামের ওই বিনিয়োগকারীর চিঠির ব্যাখ্যায় কোম্পানি বিএসইসিকে জানিয়েছে, কোম্পানিটি ২০১৬ সালে ১০ ডিসেম্বর ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা করেছে। ওই সভায় উপস্থিত শেয়ারহোল্ডারদের ভোটে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানি পরিচালনা করছে। ইতোপূর্বে ৯ জন পরিচালকের মধ্যে ৬ জন পদত্যাগ করে চলে গেছেন। যা কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে।
কোম্পানিটি বলছে, বিগত কয়েক বছরে সীমাহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও নতুন গ্যাস জেনারেটর কেনার পরে প্রয়োজনীয় বর্ধিত গ্যাস সংযোগ না পাওয়ার কারণে প্রত্যাশিত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারিনি। তবে বিষয়টি কোম্পানির ১১ ও ১২ তম এজিএমে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে।
কারখানার ভয়াবহ লোডশিডিং সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদনও করা হয়েছে। যা বিএসইসি, ডিএসই এবং সিএসইকে জানানো হয়েছে।
কোম্পানি বলছে, আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ অনুমোদিত খাতে ব্যয় করা হয়েছে। একই সঙ্গে কার্যালয় স্থানান্তরের বিষয়টি সময়মত কমিশনকে জানানো হয়েছে।
এর আগে নাজমুন নাহার সানজিদা বিএসইসির কাছে সুহৃদের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়া দাবি জানিয়ে আবেদন করেন। বিএসইসি কোম্পানির কাছে ওই চিঠির ব্যাখ্যা জানতে চায়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মাত্র ৯ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে আছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। বর্তমানে কোম্পানিটি লোকসানে চলছে। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। ১ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটি জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।
চিঠিতে দাবি করা হয়, আইপিওর টাকা দিয়ে মেশিন ও ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বিএসইসি আইন ভেঙ্গে আইপিওর বেশিরভাগ টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। পরে আবার অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। তা থেকে কোটি টাকার ওপর ওভার ডিউ রয়েছে। কিন্তু এই টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ বর্তমান চেয়ারম্যানের নেই বলে দাবি করা হয় চিঠিতে।
বর্তমানে কোম্পানির প্রধান কার্যালয় ধানমন্ডি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। অথচ এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০০৪ সালের ২৬ মার্চে যাত্রা শুরু করে। কোম্পানাটি ২০০৮ সালের ৩ মে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল পাবলিকে নিবন্ধিত হয়। আর ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়।
প্রথম বছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৪ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও এর পর বাকী ২ বছর কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
২০১৪ সালে শেষে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৬৪ পয়সা। তবে তার পর বছর কোম্পানিটি লোকসানে পড়ে। ২০১৫ সাল শেষে কোম্পানির শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৩ পয়সা।এসময় কোম্পানির নিট লোকসান হয় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা।
তবে ২০১৬ সালে বেড়ে যায়। এসময় শেয়ার প্রতি লোকসান হয় ৪ পয়সা। আর এই বছরে নিট লোকসানের পরিমাণ দায় ২২ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির বর্তমান রিজার্ভ রয়েছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৫২ কোটি ১৫ টাকা। বর্তমানে কোম্পানিটির ৫ কোটি ২১ লাখ ৫২ হাজার ৫০০টি শেয়ার রয়েছে।
কোম্পানির মোট শেয়ারের ৯.৪১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকের কাছে। বাকী সব শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। যার পরিমাণ ৯০.৫৯ শতাংশ।