শূকরের মাংসে ভ্যাট তুলে দিলেন অর্থমন্ত্রী: মানুষকে বোকা বানালেন
প্রচ্ছদ » Uncategorized » শূকরের মাংসে ভ্যাট তুলে দিলেন অর্থমন্ত্রী: মানুষকে বোকা বানালেনপুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক : মানুষকে বোকা বানানোর প্যাঁচ ভালোই দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অপ্রয়োজনীয় পণ্যের লম্বা তালিকা যোগ করে ভ্যাট অব্যাহতির পণ্যসংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে বাহবা কুড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু অব্যাহতির তালিকায় এমন অনেক পণ্যের নাম ঢোকানো হয়েছে যেগুলো এ দেশের অনেক মানুষেরই জীবদ্দশায় একবারও দরকার পড়ে না।
দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে এসব পণ্যের প্রয়োজনীয়তা কতটা সে প্রশ্ন এখন প্রায় সবার মুখে মুখে। গত বৃহস্পতিবার সংসদ সদস্যদের (এমপি) মধ্যে ‘অর্থ আইন ২০১৭’-এর যে কপি বিতরণ করা হয়েছে, তাতে সুকৌশলে তুলে ধরা হয়েছে করজাল ফেলার কৌশল।
শূকর, ঘোড়া, গাধা, খচ্চর বা ঘোটকের মাংসে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আমদানি ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে শূকরের মাংসে। বাদাম, চিনাবাদামের ক্ষেত্রেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ভ্যাট।
অন্যদিকে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বসানো সাবান, শ্যাম্পু, শেভিং আইটেম, মশার কয়েল, অ্যারোসলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্য অব্যাহতির তালিকায় রাখা হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষকে ভ্যাট থেকে বাঁচানোর যে চেষ্টার কথা প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, বাস্তবে তাতে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে।
কেবল ভ্যাটেই নয়, নির্বাচনের আগের বছরে অর্থমন্ত্রী জনগণের ওপর ঘন করজাল ফেলেছেন, যেখান থেকে চুনোপুঁটিদের রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই। নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষও ছাড় পাবে না করের জাল থেকে। তবে সমাজের উচ্চবিত্তসহ রাঘব বোয়ালদের আটকানোর কোনো চেষ্টা লক্ষ করা যায় না প্রস্তাবিত বাজেটে। অর্থমন্ত্রী বাড়তি টাকা আদায় করতে চাইছেন অন্য পেশাজীবীদের কাছ থেকে। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব ছেলে-মেয়েরা পড়ে, তাদের প্রতি কোনো বিদ্বেষ না থাকলেও নানাভাবে ওই সব শিশুর অভিভাবকের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ার জোরালো চেষ্টা আছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও উঠতি মধ্যবিত্তদের আটকানোর সব চেষ্টার কথা দেড়শ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতায় আড়াল করেছেন অর্থমন্ত্রী।
ভ্যাট অব্যাহতির ঘোষণায় শুভংকরের ফাঁকি: ভ্যাট অব্যাহতির ঘোষণা দিতে গিয়ে বাজেট বক্তব্যে অনেক বেশি মানবিক হওয়ার চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, বিদ্যমান ১৯৯১ সালের আইনে মাত্র ৫৩৬টি পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতি ছিল। নতুন আইন কার্যকর করতে গিয়ে ওই সংখ্যা বাড়িয়ে এক হাজার ৪৩ করা হয়েছে।
কিন্তু অর্থ আইন, ২০১৭-এ শুধু পাঁচ কোটি টাকার ওপর জমা ও তোলার ক্ষেত্রে ১৫ হাজার টাকার বদলে ৩০ হাজার টাকা কর্তনের কথা বলা আছে। এ ক্ষেত্রে আর কোনো ধরনের পরিবর্তনের তথ্য নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের আইনি কোনো ভিত্তি নেই। অর্থ আইনই এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত। তবে বাজেট বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটাতে হলে অর্থ আইন সংশোধন করা হতে পারে।