৩১ মার্চের মধ্যে আরএন স্পিনিংয়ের ৪ বছরের এজিএম করার নির্দেশ

প্রচ্ছদ » Uncategorized » ৩১ মার্চের মধ্যে আরএন স্পিনিংয়ের ৪ বছরের এজিএম করার নির্দেশ

পুঁজিবাজার রিপোর্ট ডেস্ক : আরএন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) অনুষ্ঠান নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার চূড়ান্ত অবসান হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ আরএন স্পিনিংয়ের চার বছরের এজিএম আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠানের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বিচারপতি এম. আর. হাসানের একক বেঞ্চ এ রায় দেন। বিলম্বে এজিএম অনুষ্ঠানে আদালতের অনুমোদন নেয়ার জন্য কোম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্যানুযায়ী, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে আরএন স্পিনিংকে বিদ্যমান একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি হারে রাইট ইস্যুর অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ২০ টাকা ইস্যুমূল্যে ওইসময় সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে অর্থ উত্তোলন করে কোম্পানিটি। তবে উদ্যোক্তা-পরিচালকরা রাইট শেয়ারের জন্য কোম্পানিতে কোনো টাকা জমা না দিয়েই ব্যাংকের জাল কাগজপত্র জমা দিয়ে বিএসইসিকে জানায়, তারা ওই শেয়ার কিনেছেন। পরবর্তীতে বিএসইসির অনুসন্ধানের জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আরএন স্পিনিংয়ের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর, বন্ধক ও উপহার দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কমিশন। পরবর্তীতে বিএসইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যায় আরএন স্পিনিং। আদালত বিএসইসির সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করলে পাল্টা মামলা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাও। মামলায় কোম্পানির এজিএমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসে। এর পর থেকে দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে ছিল এ কোম্পানির এজিএম এবং লভ্যাংশ।

আরএন স্পিনিংয়ের পরিচালকদের রাইট শেয়ার জালিয়াতির ঘটনায় বিএসইসি, কোম্পানি ও এর পরিচালকদের পক্ষ থেকে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা হয়। এর মধ্যে বিএসইসির করা এজিএম স্থগিত-সংক্রান্ত মামলায় কোম্পানির লিভ টু আপিলের রায়ে বিষয়টি আবারো তদন্ত করে সমাধানের নির্দেশ দেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে একটি কমিটি গঠন করে কমিশন। কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে আরএন স্পিনিংয়ের পরিচালকদের জরিমানা ৫০ শতাংশ কমিয়ে সব মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে কোম্পানির সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছায় বিএসইসি। সমঝোতা অনুযায়ী, রাইট শেয়ার কেলেঙ্কারির দায়ে বিএসইসি আরোপিত কোম্পানির ১০ লাখ টাকা ও পরিচালকদের সাড়ে ৭২ লাখ টাকা জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছে আরএন স্পিনিং। অন্যদিকে কোম্পানির পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর এজিএম-ইজিএম সংক্রান্ত রিট পিটিশন এবং পরিচালকদের করা লিভ টু আপিল প্রত্যাহার করেছে কোম্পানি।

এদিকে সময়মতো এজিএম সম্পন্ন করতে না পারায় একসঙ্গে চার বছরের এজিএম অনুষ্ঠানের জন্য আদালতের অনুমতি নেয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের কাছে এজিএম অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রার্থনা করে। আরএন স্পিনিংয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে এজিএম অনুষ্ঠানের নির্দেশনা দিয়ে বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করেন।
উল্লেখ্য, মামলা-সংক্রান্ত জটিলতার পাশাপাশি ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে না আরএন স্পিনিংয়ের। মূল পণ্য অ্যাক্রেলিক সুতার চাহিদা কমে যাওয়ায় সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটি লোকসানে পড়েছে। ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৮ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে তারা। অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম (জুলাই-ডিসেম্বর) ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি ৮ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি।

২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শতভাগ রফতানিমুখী আরএন স্পিনিং মূলত ১৬ ধরনের অ্যাক্রেলিক ও দুই ধরনের কটন সুতা উত্পাদন করে থাকে। আগের বছরগুলোয় কোম্পানির উত্পাদন ও রফতানিতে ইতিবাচক ধারাবাহিকতা থাকলেও ২০১৪ সাল থেকে রফতানিতে ধস নামে। ২০১৪ ও ২০১৫ সাল মিলিয়ে কোম্পানির রফতানি কমেছে ৪০ শতাংশের বেশি। ২০১৩ সালে কোম্পানিটির মোট পণ্য রফতানি ছিল ৩৮৫ কোটি ৯৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, ২০১৫ সালে যা ২৩২ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় নেমে এসেছে।

+

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০