অতি জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জোরদারের দাবি

প্রচ্ছদ » Uncategorized » অতি জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জোরদারের দাবি

পুঁজিবাজার রিপোর্ট প্রতিবেদক : অতি জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জোরদার করার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ সঙ্কট প্রশ্নে প্রধান আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর নিষ্ক্রিয়তা বাংলাদেশকে মর্মাহত করেছে। অথচ, সীমিত সম্পদ সত্ত্বেও মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশ শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিল।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। তার এ ভাষণের প্রাক্কালে বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘হাই-লেভেল সাইড ইভেন্ট অন ফরসিবলি ডিসপ্লেস মিয়ানমার ন্যাশনালস (রোহিঙ্গা) ক্রাইসিস: ইম্পারেটিভ ফর এ সাস্টেইনেবল সল্যুশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাধারণ পরিষদের এই গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ আলোচনায় রোহিঙ্গা সঙ্কট তুলে ধরতে ঢাকার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বারবার বলেছি, তারা (রোহিঙ্গারা) মিয়ানমারের নাগরিক। সুতরাং, তাদের অবশ্যই নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিয়ে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারেই ফিরে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতএব, এ ব্যাপারে জরুরি প্রস্তাব গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, এক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশে যা কিছু করা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে অস্থায়ী ভিত্তিতে করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যা কিছু করা সম্ভব তা অবশ্যই করতে হবে। এদিকে তারা নিজেরাও তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে ন্যায়বিচার ও দেশে প্রত্যাবর্তনে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর মধ্যে আস্থা ফেরাতে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে নিপীড়নের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে প্রধানমন্ত্রী প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর থেকেই এ সঙ্কটের একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য ধারাবাহিকভাবে জাতিসংঘের অধিবেশনে তিনি বিভিন্ন প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ বজায় রেখেছে’ বলে জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আঞ্চলিক ক্ষেত্রে আমরা চীন-ভারতসহ প্রধান শক্তিগুলোকে এ সঙ্কট সমাধানে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে আসিয়ানকে আরও সক্রিয় রাখার চেষ্টা চালিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করে জাতিসংঘে প্রস্তাবের মাধ্যমে বিষয়টি আলোচনার টেবিলে ধরে রেখেছি। তবে, দুঃখজনকভাবে ‘দুর্ভাগা, গৃহহীন হয়ে পড়া মিয়ানমারের নাগরিকদের দেশে ফেরাতে আমাদের চলমান প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত কোনো আলোর মুখ দেখেনি।’ আজ পর্যন্ত তাদের একজনও তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারেননি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, বিগত চার বছর ধরে বাংলাদেশ অনেক আশা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে যে, বাস্তুহারা এসব মানুষ নিরাপদে ও মর্যাদা সহকারে তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে।

তিনি বলেন, তা সত্ত্বেও, আমাদের আহ্বান অবহেলিত রয়ে গেছে ও আমাদের প্রত্যাশা অসম্পূর্ণ রয়েছে। এ সঙ্কটের পঞ্চম বছর চলছে। এখনও আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কটের একটি স্থায়ী সমাধানের আশা রাখছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেখা দেওয়া এই মানবিক সঙ্কট সমাধান করা ছিল একটি সম্মিলিত দায়িত্ব ও বিভিন্ন সীমান্তে এর প্রভাব পড়ছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে অতি দ্রুত কিছু করতে ব্যর্থ হলে ‘আমাদের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা মহাবিপদে পড়বে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির ঘাটতির কারণে হতাশা বেড়ে যাওয়ায় তাদের অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে ও তারা অতি সহজে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের শিকার হচ্ছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এই সঙ্কট সমাধানে পাঁচ দফা আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রথমত, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘আমাদের সবার জোরালো প্রচেষ্টা’ চালানো প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তা দূর করতে মিয়ানমারে রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তন ঘটানো ও এই সঙ্কট সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সংশোধন প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে আসিয়ানের জোরদার প্রচেষ্টা দেখতে চান। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এক্ষেত্রে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তাদের পদক্ষেপ মিয়ানমারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুঁজিবাজার রিপোর্ট – আ/ সি/ ২৩ সেপ্টেম্বর , ২০২১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Live Video

[ytplayer id=33256]

সম্পাদকীয়

অনুসন্ধানী

বিনিয়োগকারীর কথা

আর্কাইভস

April ২০২৪
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
« Mar    
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০